Rohosso Romancho Series - Dybbuk Box Mystery
- SineMeCinema
- Jun 30, 2021
- 8 min read
Dybbuk Box Mystery - Written By Piyali Saha Singh
তবে একটা কথা আগে বলে নেই আজ যে বিষয় সম্পর্কে কথা বলব সেটা ঘাটতে গিয়ে আমার মাথা বেশ ঘেটে গিয়েছে। তার কারন এখনো অব্দি প্রচুর ভৌতিক বিষয় নিয়ে সিনেমা হয়েছে, চর্চা হয়েছে, রিসার্চ হয়েছে দেখেছি কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে এত বাড়াবাড়ি মনে হয় আর কোথাও দেখিনি। বিষয়টি ঘাটার সময় একটার পর একটা দিক খুলেই যাচ্ছিল। হঠাৎ করে এত তথ্য সামনে এল যে সেগুলোকে পর পর সাজাতে গিয়ে বেশ হিম সিম খেয়ে গেছি। তবুও একটা ছোট্ট প্রচেষ্টা আপনাদের সামনে রাখলাম। আশাকরি ভাল লাগবে।
'দ্য পোসেশন' সিনেমাটা শুরু হওয়ার আগে স্ক্রিনে একটা লেখা ভেসে ওঠে- 'The following is based on a true story'. সিনেমাটা একটা পরিবারের সাথে ঘটে যাওয়া কিছু ভৌতিক ঘটনা নিয়ে এবং যেটা সত্যিকারের ঘটনা অবলম্বনে তৈরি। যখনই কোন সিনেমা সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয় বিশেষ করে ভূতের সিনেমা, কেন জানিনা আমার আগ্রহ কয়েকগুন বেড়ে যায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। সিনেমাটির আই এম ডি বি রেট তেমন নয় ৫.৯/১০ তবে সিনেমাটা যে বিষয়বস্তু কেন্দ্রীক সেটার পপুল্যারিটি রেট কিন্তু বাস্তব জীবনে বিশাল।যারা সিনেমাটা দেখেছেন তারা এতক্ষণে হয়ত বুঝে গেছেন যে আমি 'ডিব্বিক বক্স' এর কথা বলছি। আর আজকের বিষয়বস্তু হল এই বক্স সম্পর্কিত বিভিন্ন আকর্ষণীয় তথ্য নিয়ে আলোচনা। তাহলে শুরু করা যাক আজকের আড্ডা। আমার মনে হয়না আমার লেখায় সিনেমা সম্পর্কিত কোন স্পয়লার থাকবে তাই যারা এখনো সিনেমাটা দেখেননি তারাও পড়তে পারেন।
★ডিব্বিক বক্স সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা★
'ডিব্বিক' বা 'ডিব্বেক' বা 'ডিব্বিউক' (Dybbuk) যেকোন একটা উচ্চারণ ধরে নিন। যেমন আমি 'ডিব্বিক' টা ধরলাম। শব্দটা আসলে হিব্রু ভাষার অন্তর্ভুক্ত। শব্দটার অর্থ 'চিপকে থাকা বা লেগে থাকা'। আর এর থেকেই এসেছে ডিব্বিক বক্স। জিউইশ ধর্মমতে কোন অতৃপ্ত আত্মা নিজের জীবিত অবস্থায় যে কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি তাকে এই বক্সে আটকে রাখা হয়। যদি কেউ এই বক্স খোলে তখন সেই আত্মা সেই জীবিত ব্যাক্তির সাথে চিপকে যায় অর্থাৎ পেছনে পরে যায়। তাকে কাজে লাগিয়ে নিজের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করে এবং তারপর তাকে পরিত্যাগ করে চলেও যেতে পারে।
বক্সটা সাধারণত একটা ওয়াইন ক্যাবিনেটের মত দেখতে। একটা পৈশাচিক আত্মাকে আটকে রাখার জন্য যে সমস্ত কালা জাদুর জিনিসের দরকার সেগুলো এই বক্সে রাখা হয়েছে। জিনিসগুলো হল-
*১৯২০ সালের ২ টা মুদ্রা।
*এক গুচ্ছ সোনালী রঙের চুল তার দিয়ে বাধা।
*এক গুচ্ছ বাদামী রঙের চুল তার দিয়ে বাধা।
*দুটো শুকনো গোলাপের কুঁড়ি।
*একটা ছোট মূর্তি যেটায় হিব্রু ভাষায় খোদাই করে লেখা 'শ্যালোম' ( যার মানে শান্তি। না আপনি যেই শান্তির কথা ভাবছেন সেটা নয়। আরেকটু গভীরে যান। মানুষের জীবনের পরম শান্তির কথা বলা হয়েছে অর্থাৎ মৃত্যু)।
*একটা ওয়াইন রাখার পাত্র (জিউইশ ধর্মে ওয়াইনকে ইভিলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য ব্যবহৃত করা হয়)।
*একটা মোমবাতি দানি যার চারটি পা অক্টপাসের পায়ের মত দেখতে।
বাক্সটির পেছনে হিব্রু ভাষায় কিছু কথা খোদাই করা আছে। যার মানে এই দাঁড়ায় যে- এই বাক্সে বন্দী আত্মার শক্তিকে শেষ করে ফেলার কোন উপায় নেই তবে এই আত্মাকে শান্ত রাখার উপায় আছে। তার জন্য এই কাঠের বাক্সের চারপাশে সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এতে এই অশুভ শক্তি এই বাক্সেই আটকে থাকবে এবং শান্ত থাকবে (বিজ্ঞানের মতে নাকি সোনা কোন নেগেটিভ এনার্জিকে দমিয়ে রাখতে সাহায্য করে)।
★ডিব্বিক বক্সের সূত্রপাত★
গল্পের শুরু হয় পোল্যান্ড থেকে। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। নাৎসিদের কনসেনট্রেশান ক্যাম্পে চলছে নরহত্যা। হাবেলিয় (Haveleh) নামে এক মহিলা তার পরিবারসহ সেই ক্যম্পে বন্দী। সেই হত্যাকাণ্ডে তার সমস্ত পরিবার স্বামী থেকে শুরু করে ভাইবোন ও তার ছেলে-মেয়ে সবাই মারা যায়। তবে সে কোন রকমে এই ক্যাম্প থেকে অন্যান্য কয়েকজন কয়েদীদের সাথে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। সে স্পেন চলে যায়। সেখানে থাকাকালীন সে একটা ওয়াইন ক্যাবিনেট কেনে অর্থাৎ এই ডিব্বিক বক্সটি কেনে (যদিও এটা অনেকেই বলেন যে হাবেলিয় বক্সটি কেনেনি আদপে সে কয়েকজন মহিলাকে নিয়ে একটা প্রেত সম্পর্কিত রিচুয়াল করে কোন এক প্রেত আত্মাকে বক্সে আটকে রাখে)। যাইহোক পরে যখন আমেরিকায় অভিবাসনের জন্য তাকে যেতে হয় তখন এই বক্সটি সে নিজের সাথেই নিয়ে যায় এবং পরে সেখানেই সে মারা যায়। হাবেলিয় চেয়েছিলেন তার মৃত্যুর পর যেন তার কবরের সাথে এই বক্সটিকেও পুঁতে দেওয়া হয় কিন্তু তার ইচ্ছে পূরণ করা হয়নি তার নাতনি এটা নিজের কাছেই রেখে দেয়।
বক্সটার কিছু বিশেষত্ব এখানে উল্লেখ করি। যখন যার কাছে বক্সটা থাকে তার সাথে বা সেই জায়গায় কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। যেমন কোন কাঁচের জিনিস থাকলে ভেঙে যায়, লাইট জ্বললে সেটা ডিসটার্ব দেয় বা ভেঙে যায়, কোথাও একা একাই আগুন লেগে যায়, মানুষের অশরীরী ছায়া জাতীয় জিনিস দেখা যায়, মানুষ খুব খারাপ স্বপ্ন দেখে, কখনো জুঁই ফুলের গন্ধ পাওয়া যায় তো কখনো বেড়ালের প্রস্রাবের গন্ধ পাওয়া যায় ইত্যাদি। এই গন্ধের ব্যপারটা নিয়ে একটু বলি। যদি কেউ এই বক্সটার ব্যাপারে ভাল চিন্তা ভাবনা নিয়ে এটার কাছে যায় তাহলে সে জুঁই ফুলের গন্ধ পায় অপরদিকে যে এই বক্সটাকে পছন্দ করেনা বা এর ক্ষতি করার উদ্দেশ্য কাছে যায় সে বেড়ালের প্রস্রাবের গন্ধ পায়। এই অভিজ্ঞতাটা অনেকেই শেয়ার করেছে। এছাড়াও বক্সটা থেকে সব সময় একটা আকর্ষিত গন্ধ বের হয় যেটা বক্সটার আশেপাশে থাকা সকলকে নিজের কাছে টানে। হাবেলিয়র নাতনির সাথেও এমন অনেক ঘটনাই ঘটে।
২০০১ সালে হাবেলিয় মারা গেলে তার নাতনি ঠিক করে সে তাদের পরিবারের কিছু জিনিস বিক্রি করবে এবং সেই লিস্টে এই বক্সটিও ছিল। ঘটনাক্রমে কেভিন ম্যানিস নামে এক ব্যবসায়ী এই বক্সটি কেনে। তবে হাবেলিয়র নাতনি কেভিনকে এই বক্সের পুরো ইতিহাস জানিয়ে দেয় কোন কিছু না লুকিয়ে।সাথে সে এটাও বলে কোন পরিস্থিতিতেই যেন বক্সটা খোলা না হয়। এরপরে কেভিন সেটা নিয়ে আসে নিজের কাঠের ফার্নিচারের দোকানে। আর ঠিক সেই দিনই তার দোকানে কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। দোকানে বক্সটা রেখে কেভিন একটা কাজে বাইরে যায়। হঠাৎ কিছুক্ষণ পরে তার অ্যাসিস্ট্যান্ট তাকে ফোন করে জানায় দোকানে কেউ ঢুকেছে। অনেক ভাঙচুর হয়েছে এবং নিচে বেসমেন্টে খুব আওয়াজ হচ্ছে তাই সে দোকানটা বাইরে থেকে তালা দিয়ে দিয়েছে যাতে কেউ ঢুকে থাকলে বেরোতে না পারে। কেভিন এটা শুনেই তড়িঘড়ি দোকানে ছুটে আসে। এসে দেখে তার অ্যাসিস্ট্যান্ট কোথাও নেই। ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে সে দোকান খোলে খুব সাবধানে। ঢুকেই সে দেখে দোকানের অনেক জিনিস ভেঙে চুরমার। মনে হচ্ছে কেউ ইচ্ছেমতো জিনিসপত্র এদিক ওদিক ছুঁড়েছে। ঠিক তখনি সে দোকানের বেসমেন্টে অদ্ভুত আওয়াজ শুনতে পায় কিন্তু সে নিচে গিয়ে কাউকে খুঁজে পায়না। এরপর হঠাৎ বেড়ালের প্রস্রাবের বিশ্রী গন্ধে দোকান ভরে যায়। সবটাই খুব অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু এর থেকেও বেশি অদ্ভুত ব্যাপার ঘটল যে কেভিনের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেদিনের পর থেকে আর কোনদিন তার দোকানেও আসেনি এবং তার সাথে কোন যোগাযোগও রাখেনি অথচ সে প্রায় ২ বছর সেই দোকানের কর্মচারী ছিল। কেভিন পরে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিল তাকে যে আসলে কি ঘটনা ঘটেছিল সেদিন কিন্তু তার অ্যাসিস্ট্যান্ট কোন উত্তর দেয়নি। ব্যাপারটা অস্বাভাবিক হলেও কেভিন তখন অতটা গ্রাহ্য করেনি।
কেভিনের মা অ্যান্টিক জিনিস খুব পছন্দ করতেন এবং সামনেই তার জন্মদিন ছিল তাই কেভিন ঠিক করে তার মাকে এই ডিব্বিক বক্সটি উপহার দেবে। উপহার পেয়ে তার মা সত্যি খুব খুশি হন। তিনি উপহার পেয়ে সাথে সাথেই বক্সটা খোলেন। অদ্ভুত ব্যাপার হল এর ঠিক ৫-৬ মিনিট পরেই তার স্ট্রোক হয়। এতে তার বলার ক্ষমতা হারিয়ে যায়।
এরপর কেভিন এই বক্সটি তার বোনের কাছে রাখতে দেয়। ১ সপ্তাহ পর তার সেটা তাকে ফেরত দিয়ে যায়। সে জানায় যে বক্সটা প্রায়ই একা একাই খুলে যেত। অথচ বক্সটার গঠনে তেমন কোন মেকানিসম নেই যে সেটা একা একাই খুলে যেতে পারে। এরপর সে তার ভাই ও তার বউ এর কাছে বক্সটা রাখতে দেয়। তারা ৩ দিন পরই সেটা ফেরত দিয়ে দেয়। কেভিনের ভাই তাকে জানায় যে সে বক্সটার কাছে গেলেই জুঁই ফুলের গন্ধ পেত কিন্তু তার বউ সেই বক্সটার কাছে গেলে বেড়ালের প্রস্রাবের বিশ্রী গন্ধ পেত। কেভিন বুঝতে পারে যে বক্সটা স্বাভাবিক নয় কিন্তু কোন উপায় না পেয়ে সে ঠিক করে যে নিজের বাড়িতেই বক্সটি রেখে দেবে। কিন্তু তাতে সে এক অদ্ভুত ঘটনার সম্মুখীন হয়। যেমন প্রত্যেক রাতে সে একইরকম বীভৎস স্বপ্ন দেখা শুরু করে। স্বপ্নে সে তার কাছের কাউকে দেখতে পেত। সে তার সাথে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। কিন্তু যখনই সে গল্প করতে করতে তার চোখের দিকে তাকাত সে দেখত এক বিকৃত চেহারার আকৃতি তার দিকেই এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে আর প্রত্যেকবার সে চমকে জেগে উঠত। আর ঘর বেড়ালে প্রস্রাবের বিশ্রী গন্ধে ভরে যেত অথচ সে কোন দিনও বেড়াল পুষত না। এছাড়াও কেভিনের প্রতিবেশীরা কেভিনের ঘরে কোন অশরীরী ছায়াকে ঘোরাফেরা করতে দেখত। কেভিন একদিন তার ভাইবোনদের বাড়িতে ডাকে এবং খারাপ স্বপ্নগুলোর কথা তাদের জানায়। আশ্চর্যের বিষয় হল তারা প্রত্যেকেই সেই একই স্বপ্ন দেখার কথা উল্লেখ করে। ব্যাপারটা সত্যি খুব অদ্ভুত।
এরপর কেভিন সেটা আর নিজের কাছে রাখেনি। ইবেতে অনলাইন বিক্রি করে দেয়। এরপর যারা এই বক্সটি কেনে প্রত্যেকের সাথেই কিছু না কিছু অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে এবং একের পর এক বক্সের মালিক পাল্টাতে থাকে।
★বক্সটির বর্তমান অবস্থা★
বক্সটি তখন অনলাইন কেনা বেঁচা চলছে। ঠিক এভাবেই একটা ছেলের হাতে বক্সটা এল। তার সাথেও রীতিমতো সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। ছেলেটার এক বন্ধু তখন 'মিউজিয়াম অফ অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিন' -এর একজন ইন্টার্ন ছিল। সে তার সেই বন্ধুকে বক্সের অদ্ভুত ক্রিয়াকলাপ সম্পর্কে জানায় এবং সেই বন্ধুটি আবার এসব তথ্য জানায় সেই মিউজিয়ামের ডিরেক্টর জেসন হ্যাক্সটনকে। এবং তাকে এই বক্সটি কেনার জন্য অনুরোধ করে। জেসন সব ঐতিহাসিক জিনিস কালেক্ট করত। তার মধ্যে বেশিরভাগই ছিল মানুষের শরীরের অংশ বা আগে ডাক্তাররা অপারেশনের সময় যেসব জিনিসপত্র ব্যবহার করত সেসব। এই বক্সটি উপরিউক্ত কোন ভাগেই পড়েনা তাই প্রথম দিকে জেসনের সংশয় থাকলেও তার বন্ধু মাইকেল তাকে বলে যে এটা একটা ভাল ইন্টারেস্টিং বিষয় হতে পারে তার মিউজিয়ামের জন্য। তাই তার জোড়াজুড়িতে সে সেটা কিনে ফেলে। জেসন বক্সটি কিনে সবার প্রথমে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। এবং স্বভাবতই সেই প্রথমদিনিই তার বাড়িতে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। হঠাৎ করে ঝোড়ো হাওয়া এসে তার বাড়ির সামনে থাকা একটা বড় গাছ ভেঙে দেয়। আর সেটা এমনভাবেই ভাঙে যে যদি জেসনের প্রতিবেশীরা সঠিক সময় না এসে সাহায্য করত তাহলে তার বাড়ির প্রায় বেশির ভাগ অংশই গাছের ভাঙা ডালের চাপায় নষ্ট হয়ে যেত।
এরপর জেসন বক্সটি তার মিউজিয়ামে নিয়ে যায়। সেখানেও সব অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে থাকে। যেমন যেই জায়গায় বক্সটি রাখা হয় সেই দেওয়ালের অপর পাশে হঠাৎ করে প্রায় ১০০র বেশি সংখ্যক বড় সেন্টিপিডস ( বড় কেন্ন জাতীয় পোকা) দিয়ে ভরে যায়। জেসনের কথায় কোথাও কোন নেগেটিভ এনার্জি থাকলে পোকামাকড়েরা নাকি তাতে খুব আকৃষ্ট হয়। এছাড়াও বক্সটাকে যখন মিউজিয়ামের বেসমেন্টে রাখা হয় সেখানে প্রচুর মাকড়সা চলে আসে। এবং বেসমেন্টের সিলিং এ সাদা ছাতা পড়ে যায়। এবার অদ্ভুত ব্যাপার হয় যে যেদিন বক্সটাকে সেখান থেকে সরানো হয় সেদিনিই সেই মাকড়সা ও ছাতা সব উধাও হয়ে যায়।
এরপর জেসন এই বক্সের ইতিহাস ঘাটতে শুরু করে এবং পরে কেভিন ম্যানিসের খোঁজ পায় ও তার সাথে দেখা করে এবং সবটা শোনে। জেসন কয়েকজন জিইউশ ধর্মীয় ব্যক্তিদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করে যে এই বক্সটি খোলামেলা ভাবে রাখা খুব বিপদজনক। বক্স যে কাউকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে তাই সে একটা আলাদা বাক্স বা আর্ক বানায়। সেই আর্কের ভেতর সোনা দিয়ে একটা প্রলেপ দেওয়া হয় (সোনা কেন?? কারনটা আমি লেখার শুরুতেই বলেছি)। এবার ডিব্বিক বক্সটা সেই আর্কের ভেতর ভরে রাখা হয়। এরপর জেসন বক্সটি একজন প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর জ্যাক ব্যাগানসকে দিয়ে দেন। বর্তমানে এই বক্সটি জ্যাকের 'দ্য হন্টেড মিউজিয়াম' এ সেই আর্কের মধ্যে রয়েছে।
***বক্সটা নিয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য***-
★দ্য ডিব্বিক বক্স চ্যালেঞ্জ★
ডিব্বিক বক্স তখন খুব পপুলার হয়ে গেছে একে নিয়ে সব অদ্ভুত ঘটনা মোটামুটি অনেকেই জেনে গেছে। এরপর শুরু হল এই বক্সকে অনলাইন কেনা বেঁচা (মানে উপরে যেই বক্সের কথা এতক্ষণ বললাম সেটা নয় এমন অন্য অনেক বক্স কেনা বেঁচা শুরু হওয়ার কথা বললাম)। যাইহোক শুরু হল ইউটিউবে 'দ্য ডিব্বিক বক্স চ্যালেঞ্জ '। এই চ্যালেঞ্জে মানুষ প্রথমে ডার্ক অয়েব থেকে বক্সটা অনলাইন অর্ডার করত( জিইউশরা এই বক্স বানাত)। সেটা এলে ইউটিউব লাইভে আনবক্স করত এবং সেই বক্স বাড়িতে থাকার ফলে যা যা ঘটত সেটা ক্যামেরায় রেকর্ড করে ইউটিউবে পোস্ট করত। এভাবে এই চ্যালেঞ্জ অনেক পপুলার হয়ে গিয়েছিল। এমনকি এই চ্যালেঞ্জের ওপর একটা সিনেমাও তৈরি হয়। সিনেমাটার নাম 'দ্য ডিব্বিক বক্স - ট্রু স্টোরি অফ ক্রিস চেম্বার'। আই এম ডি বি তে এর রেটিং ৫.৫/১০।
★ডকুমেন্টারি শো অন ডিব্বিক বক্স★
প্যারা নরম্যাল উইটনেস নামে এক শোর সিজন ২ এপিসোড ৪ 'দ্য ডিব্বিক বক্স' নামে একটা ৪৩ মিনিটের ডকুমেন্টারি ফিল্ম দেখনো হয়। রিলিজ ডেট ছিল ২৯ শে আগস্ট ২০১২। আই এম ডি বি তে রেট জানেন কত?? ৮.৭/১০। একটা হরর জঁরের জন্য কিন্তু অনেকটাই।
★ডিব্বিক বক্সের হস্তান্তর★
ট্র্যাভেল চ্যানেলে ডেডলি পোসেশন নামে এক শো হয়। ডেডলি পোসেশনের সিজিন ১ এপিসোড ১ এ জেসন হ্যাক্সটন ডিব্বিক বক্সকে জ্যাক ব্যাগানসেকে দিয়ে দেয়। হ্যাঁ এটা নিয়ে রীতিমতো একটা শো হয়। সেখানে কেভিন ম্যানিসও উপস্থিত থাকে।
★ডিব্বিক বক্স নিয়ে সিনেমা★
*দ্য পোসেশন- এই সিনেমায় ডিব্বিক বক্স এর এক সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়। যদিও সিনেমায় দেখানো ডিব্বিক বক্স আসল বক্সের থেকে দেখতে আলাদা। আসল বক্সের রুপ সিনেমায় দেওয়া হয়নি।
*দ্য ডিব্বিক বক্স ট্রু স্টোরি অফ ক্রিস চেম্বার - এটিও ডিব্বিক বক্সের সাথে জড়িত সত্যি ঘটনা অবলম্বনে তৈরি।
*কিলার সোফা- এই সিনেমায় কোন ডিব্বিক বক্স নেই কিন্তু সিনেমাটা ডিব্বিক বক্সের ধারনার পরিপ্রেক্ষিতে বানানো।
★ডিব্বিক বক্স নিয়ে বই★
দ্য ডিব্বিক বক্স - জেসন হ্যাক্সটনের লেখা। বইটা অ্যামাজনে আছে।
আমার লেখার সত্যতা কতটা?
আমি আজ যা লিখেছি তার সবটাই কেভিন ম্যানিস ও জেসন হ্যাক্সটনের ইন্টারভিউ দেখে জানা। তাই এরা যদি মিথ্যে কথা বলে তাহলে আমার লেখাও মিথ্যে আর যদি এরা সত্যি কথা বলে থাকে তাহলে আমার লেখাও সত্যি।
এবার বলুন আপনাদের সবটা পড়ে কেমন লাগল? এসব কি বিশ্বাস যোগ্য মনে হল ? সিনেমাগুলো দেখা কিনা? ডিব্বিক বক্স নিয়ে কোন ইন্টারেস্ট আছে কিনা? বা এমন একটা বক্স চাই কিনা?😅
[জিইউশ ধর্মে নাকি উল্লেখ আছে যে ডিব্বিক বক্স খারাপের পাশাপাশি কখনো কখনো ভাল কাজ করতেও সাহায্য করে! মানে যেমন ধরুন যদি আপনি চাকরিরত হন তাহলে আপনার প্রোমোশন করিয়ে দিতে পারে!😅😅]
আমার লেখার সমস্ত সোর্সগুলো
গুগল
ইউকিপেডিয়া
ইউটিউব
জেসন হ্যাক্সটনের ইন্টারভিউ -https://youtu.be/JQvdgglp3মে
Comments