top of page

Rohosso Romancho Series - Divya Bharati Murder Mystery

  • Writer: SineMeCinema
    SineMeCinema
  • Jun 29, 2021
  • 5 min read

Updated: Dec 1, 2021

Divya Bharati Murder Mystery - Written by Eshita Chakraborty


৯০ এর দশকের মিষ্টি হিরোইন দিব্যা ভারতীকে চেনেন না এমন বলিউড প্রেমী খুব কমই আছেন। নিজের সরলতা এবং স্ক্রিন প্রেজেন্স দিয়ে তিনি সকলের মনে সহজেই জায়গা করে নিয়েছিলেন। কিন্তু দিব্যার রুপোলী পর্দায় আগমন যেমন আকস্মিক, তাঁর চলে যাওয়াও তেমনই হঠাৎ। ৯০ এর দশকের এই অভিনেত্রী তিন বছর চুটিয়ে অভিনয় করেছেন। ১৯৯০ তে কিছু দক্ষিণী ছবি ও পরে '৯১ এ "বিশ্বাত্মা" ছবি দিয়ে তাঁর বলিউড ডেবিউ। এই সিনেমার "সাত সমুন্দর পার" গানটার খ্যাতি আজও কমেনি। এরপর একের পর এক ছবি, একবছরের মধ্যে তিনি হয়ে ওঠেন বলিউডের ব্যস্ততম অভিনেত্রী। এহেন সফল অভিনেত্রীর আকস্মিক মৃত্যুতে সারা দেশ যেন একটা ধাক্কা পায়। আজ আমি তাঁর রহস্যময় মৃত্যু সম্পর্কিত কিছু থিওরী এখানে আলোচনা করবো, যদিও এই রহস্যের গাঁট এখনো খোলেনি।


আলোচনায় বলা হয়েছিল যে দিব্যার ব্যস্ততা ক্রমশ বেড়েই চলছিল। এরমই এক ফিল্ম 'শোলা অর শবনম' এর সেটে তাঁর পরিচয় হয় সেই সিনেমার অন্যতম প্রযোজক সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার সাথে। সাজিদের সাথে পরিচয়ের কিছুদিন পরেই তাদের প্রেমপর্ব শুরু হয়, প্রসঙ্গত বলে রাখি যে সাজিদ বিবাহিত ছিলেন। কিন্তু এর কিছু পরেই দিব্যা ও সজিদ বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। উনিশ বছরের দিব্যা'কে সাজিদ বিয়ে করেন ইসলাম মতে, দিব্যা নাম পরিবর্তন করে হন সানা নাদিয়াদওয়ালা। কিন্তু দিব্যার উঠতি কেরিয়ারের কারণে এই বিয়ের কথা গোপন রাখা হয়। এরপর সব কিছুই স্বাভাবিক চলতে শুরু করে। ইতিমধ্যেই ৪ঠা এপ্রিল, ১৯৯৩ এ মুম্বাইতে তিনি নিজের জন্য একটি চার কামরার বাড়ি পছন্দ করেন। তিনি এবং তাঁর ভাই কুনাল ভারতী এই বাড়ি দেখতে যান এবং ৫ই এপ্রিল দিব্যা বাড়িটি কিনে নেন। এই নিয়ে তিনি অত্যন্ত খুশি ছিলেন আর সেই কারণেই তিনি ঐদিনের স্কেডিউল্ড শ্যুটিং ক্যান্সেল করার অনুমতি চান, অনুমতি পেয়েও যান। আর ঐ দিনই রাতে দিব্যা শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।


এমন কি কারণ ছিল যে এতো খুশির দিনেই তাঁকে চলে যেতে হল?


এবার আসা যাক প্রথম থিওরীতে : দিব্যা ভারতী তখন মুম্বাই এর ভারসোভা এলাকার তুলসী অ্যাপার্টমেন্টের ৫ম ফ্লোরে থাকেন। সেইদিন খুশি হয়ে দিব্যা ঠিক করেন যে সেলিব্রেট করবেন। সেই মতো তিনি নিমন্ত্রণ করেন তাঁর বান্ধবী ডিজাইনার নীতা লুল্লা ও তার স্বামী ড. শ্যাম লুল্লাকে। তারাও দিব্যার খুশিতে সামিল হতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেইদিন রাত ৯টা নাগাদ নীতা ও তার স্বামী ড.লুল্লা আসেন তুলসী অ্যাপার্টমেন্টে। শুরু হয় জলসা ও মদ্যপান। রাত ১১টা নাগাদ দিব্যা উঠে কিচেনের দিকে যান, মিস্টার অ্যান্ড মিসেস লুল্লা তখন ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছেন। কিচেনে তখন দিব্যার পরিচারিকা ডিনার তৈরি করছেন। ঐ কিচেনে এমন একটা জানালা ছিল যেটা গোটা বাড়ির বাকি জানালার থেকে আলাদা। কারণ বাকি সব জানালায় গ্রিল থাকলেও ঐ জানালায় কোনো গ্রিল ছিল না, হয়তো কিচেনে থাকা মানুষটিকে মুম্বাই এর গরম থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য৷ দিব্যা ঐ জানলায় উঠে বসেন এবং নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেখান দিয়ে নিচে পার্কিং লটের কংক্রিট ফ্লোরে পড়ে যান। নীতা লুল্লার মতে পুরো ব্যাপারটা এতো তাড়াতাড়ি হয় (মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যে) যে তারা কিছু বুঝেই উঠতে পারেননি। তারা সঙ্গে সঙ্গে দিব্যাকে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যান হাসপাতালে, অ্যাম্বুল্যান্সে থাকাকালীনও শ্বাস চলছিল দিব্যার। কিন্তু হাসপাতালে যেতেই তিনি দেহত্যাগ করেন, ডাক্তার লিখে দেন 'আনন্যাচারাল ডেথ'। কেসটা যায় ভারসোভা থানায় এবং রিপোর্টেডলি, ঘরে থাকা বাকি তিনজনের সাক্ষ্য অনুযায়ী কেস তৈরী হয় অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথের। কিন্তু ভারসোভা পুলিশের তদন্তে উঠে আসে আরো ২টো নতুন দিক।


দ্বিতীয় থিওরি যেটা পুলিশ ভাবে সেটা হল সুইসাইড। দিব্যার বাবা-মা'ও এইবিষয়ে সহমত ছিলেন, তাঁরা মনে করেছিলেন দিব্যা আত্মহত্যাই করেছেন। কারণ হিসেবে যে দিকগুলো উঠে আসে সেগুলো হল : অনেক কম বয়সেই এতো প্রেশার, ব্যস্ততা --- এসব সামলাতে না পারা ও তার থেকে ডিপ্রেশন। আরেকটা দিক উঠে আসে যে সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার সাথে মনোমালিন্য, সেই সংক্রান্ত দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন। তাছাড়াও সেই সময়ে সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার কাছে আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে আসা নানা ডেথ-থ্রেটের কারণেও তিনি চিন্তিত ছিলেন এবং মদ্যপানের পর মুহুর্তের হঠকারিতায় এই সিদ্ধান্ত। কিন্তু যে মানুষটি নতুন বাড়ি কেনা নিয়ে এত খুশি ছিলেন সকালেই, তিনি রাতে হঠাৎ আত্মহত্যা করবেন কেন? তাই পুলিশের কাছে এই থিওরী তেমন জোরদার মনে হয়নি।


তৃতীয় থিওরী হল মার্ডার, খুন। ভারসোভা পুলিশ যে তিনটি থিওরীর ওপর নির্ভর করে অনুসন্ধান শুরু করেছিল, মার্ডার তাদের মধ্যে অন্যতম। আজও অনেকেই এই সম্ভাবনাকেই সঠিক বলে মনে করেন। এটা আদৌ অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ কিনা, মদ্যপানের কারণে বেসামাল হয়ে দুর্ঘটনা কিনা সেটার অনুসন্ধানেই দিব্যার বডির পোস্ট-মর্টেম করা হয়। কিন্তু দিব্যার শরীরে অ্যালকোহলের সন্ধান পাওয়া গেলেও কোনো আঘাতের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবুও কেন পুলিশ এই সম্ভাবনাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল?


প্রথম সন্দেহের কারণ : তুলসী অ্যাপার্টমেন্টের পার্কিং লট, যা প্রতিদিনই গাড়িতে ভর্তি থাকে, ঐ দিনই কিভাবে খালি ছিল এবং তাও আবার ৫ম ফ্লোরের কিচেনের জানালার ঠিক নিচেই? প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঐদিন পার্কিং লটে বাকি সব জায়গায় গাড়ি থাকলেও নির্দিষ্ট ঐ জায়গাটি খালিই ছিল। প্রসঙ্গত বলে রাখি, তুলসী অ্যাপার্টমেন্টের এই ফ্ল্যাটটা সাজিদ দিব্যাকে দিয়েছিল কিন্তু বাড়িটা সাজিদ বা দিব্যা কারো নামেই ছিল না। বাড়ির মালিক ছিলেন কোনো এক দুবাই-নিবাসী ব্যাক্তি। পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, গত অনেকদিন ধরেই সাজিদের কাছে আন্ডারওয়ার্ল্ড থেকে ফোন আসছিল দিব্যাকে এমন এক সিনেমার জন্য রাজি করাতে যাতে তাদের টাকা ইনভেস্টেড হয়েছে। কিন্তু দিব্যা বারবার সেই অফার প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমনকি তিনি এক বিশেষ আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের প্রাইভেট পার্টিতে নাচের অনুরোধও পান কিন্তু তিনি সেটাও নাকচ করে দেন। দিব্যার মৃত্যুরহস্যে সাজিদ নাদিয়াদওয়ালার নাম পুলিশের সাস্পেক্ট লিস্টে সবার ওপরে ছিল। দিব্যার পরিচারিকাকে জেরা করে জানা যায় যখন যেই মুহুর্তে দিব্যা জানলা দিয়ে পড়ে যান, তখন তিনি রান্নায় ব্যস্ত থাকায় খেয়াল করেননি। বাকি ২ উপস্থিত সদস্যদের মতে তারা টিভি দেখায় ব্যস্ত ছিলেন তাই খেয়াল করেননি। তাছাড়া দিব্যা এর আগেও অনেকবার উঠে ওয়াশরুম আর কিচেনে গিয়েছিলেন, তাই তারা ব্যাপারটাকে আনন্যাচারাল ভাবেন নি। পুলিশি তদন্তে আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় যে কিচেনের সেই জানালায় উইন্ডো-পুশার লাগানো ছিল। অর্থ্যাৎ জানালাটা কেউ খুললেও সেটা আবার আপনা-আপনিই টানে বন্ধ হয়ে যাবে, কেউ যদি দোল খাওয়ার জন্য জানলায় বসে পিঠ দিয়ে জানলার পাল্লা ঠেলে থাকেন, তো জানলার পাল্লাও আবার তাকে ঠেলে সামনের দিকে নিয়ে যাবে, অনেকটা স্প্রিং এর মতো। কিন্তু সেই জিনিসটা কেউ খুলে নিয়েছিলেন। বাড়ির লোকজন জানান যে তারা এবিষয়ে কিছু জানেন না, কিন্তু এটা যে ছিল সেটা নিয়ে বাড়ির নিয়মিত আমন্ত্রিতরা সহমত পোষণ করেন। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে দিব্যার অগোচরে এটা খুলে নেওয়া হয় এটা জেনে যে দিব্যা প্রায়ই ওখানে এসে বসেন, স্বভাবসিদ্ধ ভাবে দোল খান, তাহলে ওটা উইন্ডো-পুশার সরিয়ে দেওয়া এই 'অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ' এর ঘটনাকেই সুন্দরভাবে সাজিয়ে দেয়। অনেকের মতেই তার এতো কম সময়ে এরকম সাফল্য তাঁকে অনেকের কাছে চক্ষুশূল করে তোলে।


প্রশ্ন হল : তাঁকে কি কেউ ঠেলেছিলেন? সাজিদ কি নিজে সেসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন? নাকি তার পরিচারিকাকে দিয়েই তিনি বা অন্য কেউ একাজ করান? এ নিয়ে কোনো সঠিক তথ্য জানা যায়নি। প্রসঙ্গত, দিব্যার মৃত্যুর ঠিক ৫ মাস পরই হার্ট-অ্যাটাকে মৃত্যু হয় তাঁর পরিচারিকার। দিব্যা ভারতীর মৃত্যুরহস্য নিয়ে ভারসোভা পুলিশ ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৮ ওব্দি, প্রায় ৫ বছর তদন্ত চালায় কিন্তু তা থেকে কোনো পোক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অগত্যা পুলিশ এটিকে অ্যাক্সিডেন্টাল ডেথ বলে ফাইল ক্লোস করে দেন। যদিও তারা জানান যে ভবিষ্যতে কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে কেস আবার রি-ওপেন হতে পারে। কিন্তু সারা বিশ্বের কাছে তাঁর মৃত্যু এখনো অভেদ্য রহস্যই থেকে গেছে আর তাঁর হাসি থেকে গিয়েছে আমাদের মনের ভিতর। তিন বছরের ছোট কেরিয়ারে ২২টি মুভি করে বছর ঊনিশের দিব্যাশ নিজের কাজকে চিরন্তনের জন্য অর্পণ করে গিয়েছেন আমাদের কাছে।।

সমাপ্ত


সোর্স : গুগল, ইউটিউব, ফিল্ম আর্টিকেল ও ম্যাগাজিন


Comments


Post: Blog2_Post

Subscribe Form

Thanks for submitting!

8660898926

  • Facebook
  • Twitter
  • LinkedIn

©2021 by SineMeCinema. Proudly created with Wix.com

bottom of page